চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে সারবাহী এমভি আল-বাখেরা জাহাজে ৭ খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার আসামি আকাশ মণ্ডল ইরফানের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় চাঁদপুর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রে আদালতে তদন্তকারী কর্মকর্তা নৌ পুলিশের পরিদর্শক মো. কালাম খান আসামির ১০ দিনের রিমান্ড চান। আদালতের বিচারক মুহাম্মদ ফারহান সাদিক ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) শরীফ মাহমুদ সায়েম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে বাগেরহাটের চিতলমারী থেকে ইরফানকে আটক করে র্যাব। দুপুরে তাকে কুমিল্লায় নিয়ে আসা হয়। সেখানে তাকে আটকের বিষয়টি প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান র্যাব-১১-এর উপ-অধিনায়ক মেজর সাকিব হোসেন।
গ্রেপ্তার ইরফান (২৫) বাগেরহাটের ফকিরহাট এলাকার জগদীশ মণ্ডলের ছেলে।
র্যাব-১১-এর একটি দল ইরফানকে নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার কার্যালয়ে হস্তান্তর করে। সেখান থেকে তাকে কঠোর নিরাপত্তায় র্যাব, নৌ পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ আদালতে নিয়ে যায়।
মামলার শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন শরীফ মাহমুদ সায়েম, মাসুদ প্রধানীয়া, ইয়াসিন আরাফাত ইকরাম ও মো. শাহজাহান খান। তবে আসামির পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী শরীফ মাহমুদ সায়েম বলেন, ‘জাহাজে ৭ খুন সারাদেশের আলোচিত ঘটনা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে আদালতে উপস্থিত করে ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ব্যাপক শুনানি শেষে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। আমরা আশা করি, ব্যাপক জিজ্ঞাসবাদের মাধ্যমে আসামির সাথে অন্য কেউ সংশ্লিষ্ট আছে কি না এবং রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার জন্য কেউ জড়িত আছে কি না, তা বেরিয়ে আসবে।’
প্রসঙ্গত, গত ২৩ ডিসেম্বর চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার মেঘনা নদীর ইশানবালা মাঝেরচর খালের মুখে নোঙর করা সারবাহী জাহাজ থেকে পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় রক্তাক্ত অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও দুজনের মৃত্যু হয়।
খুন হওয়া ব্যক্তিরা হলেন জাহাজের মাস্টার ফরিদপুর সদরের জোয়াইর গ্রামের গোলাম কিবরিয়া (৬৫), তার ভাগনে জাহাজের লস্কর শেখ সবুজ (৩৫), সুকানি নড়াইলের লোহাগড়ার আমিনুল মুন্সী (৪০), লস্কর মাগুরার মহম্মদপুরের মাজেদুল ইসলাম (১৭), একই এলাকার লস্কর সজিবুল ইসলাম (২৬), ইঞ্জিনচালক নড়াইল লোহাগড়া এলাকার সালাউদ্দিন মোল্লা (৪০) এবং মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থানার বাবুর্চি রানা (২০)। এ ছাড়া আহত সুকানি জুয়েল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিভাগে চিকিৎসাধীন।
জাহাজে হতাহতের ঘটনা তদন্তে শিল্প মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে আলাদা কমিটি করা হয়েছে। আর জাহাজমালিক মাহবুব মোর্শেদ গতকাল রাতে হাইমচর থানায় ৩৯৬/৩৯৭ ধারায় মামলাটি দায়ের করেন।