মানব ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিপর্যয়গুলোর একটা হলো ট্রান্সজেন্ডার ফিতনা। এটা জিনা ব্যভিচার সমকাম কিংবা উভকামিতার চেয়েও মারাত্মক হারাম। ইতোমধ্যে অনেকেই ট্রান্সজেন্ডার শব্দটি শুনেছেন। কেউ কেউ আবার কিছুটা জেনেও থাকবেন। যারা জানেন না তাদের জন্য একটু জানাই যথেষ্ট যে, এটা হলো এক কথায় শয়তানের বড় ধরনের একটি প্রোজেক্ট। দাজ্জালের প্রিপারেটরি প্রকল্প। যার বাস্তবায়ন শুরু হয় জেন্ডার পরিবর্তন করার মিথ্যা ও অসম্ভব দাবি দ্বারা।
মহান আল্লাহ প্রাণীর চিত্র ও ছবি হারাম করেছেন যেসব কারণে, তার একটি হচ্ছে আল্লাহর সৃষ্টিকর্তা গুণের সাথে সাদৃশ্য থাকা। যেজন্য চিত্রকরকে বলা হবে, যা এঁকেছ তাতে প্রাণ দাও। তাকে সবচেয়ে কঠিন শাস্তি দানের কথাও হাদিস শরীফে বলা হয়েছে। আল্লাহর জীবন্ত সৃষ্টিতে মৌলিক বিবর্তন কিংবা দৃশ্যত বিকৃতি আনাও শরীয়তে নিষিদ্ধ। নারী-পুরুষ পরস্পরের সাজ পোশাক গ্রহণও আল্লাহর অভিসম্পাত কুড়ানোর কারণ।
ট্রান্সজেন্ডারিজমের নামে এখানে সর্বশক্তিমান আল্লাহকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে। যাকে মহান আল্লাহ ছেলে করে পাঠিয়েছেন সে কোনদিনই মেয়ে হতে পারে না। যাকে মহান আল্লাহ মেয়ে করে পাঠিয়েছেন সে কোনদিনই ছেলে হতে পারে না। ছেলে মেয়ের পার্থক্য একটা-দুইটা না। শরীর মন সব দিক দিয়ে লাখো কোটি পার্থক্য রয়েছে তাদের মধ্যে। এরপরেও ট্রান্স জেন্ডার ছেলে নিজেকে দৈহিকভাবে ছেলে কিন্তু মানসিকভাবে মেয়ে দাবি করার আর মেয়েও একইভাবে নিজেকে মনে মনে ছেলে দাবি করার নিয়ম চালু করা হচ্ছে।
যেমন একটা গরু নিজেকে বাঘ দাবি করলেই বাঘ হবে না। একটা বাঘ নিজেকে গরু দাবি করলেও কোনোদিন গরু হতে পারবে না। সার্জারী করে কি একটা বাঘকে গরু বানানো যাবে? গরু গোশত খাবে? বাঘ ঘাস খাবে? একজন নারী বা পুরুষের বিষয়টিও এমনই। বিশেষ অঙ্গই কি নারী-পুরুষের একমাত্র পার্থক্য? কেটে বাদ দিলেই হলো? অথবা পোশাক বদলে একে অপরের সাজ ধরলেই হলো? এই আইডিয়া মনুষ্যত্ব ওয়ালা মানুষের না বরং মানুষের চেহারাওয়ালা শয়তানের।
প্রথমে আমরা এই পরিচয় বিনাশী যৌননৈরাজ্য বা নবতর শয়তানি চিন্তার কথা বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে এই শয়তানিটা প্লান করে পশ্চিমারা আমাদের মুসলিম সমাজে সুপরিকল্পিতভাবে পুশ করতে চাচ্ছে। বারবার পাঠ্যবইয়ে শরিফার গল্প বর্ণনার কারণও এটাই। আল্লাহ না করুক আপনার ছেলে যদি কোন একদিন বলে আমি মেয়ে। মেয়ে বলে আমি আসলে ছেলে। তাহলেই শুরু হবে জীবন নিয়ে তামাশা। ধর্ম মানবতা সমাজ শৃঙ্খলা উত্তরাধিকার বিয়ে-শাদি সবই ধ্বংসের মুখে পৌঁছে যাবে।
একটা সময় মানুষ ছেলে মেয়ের অবৈধ সম্পর্ককেও ভাববে সহজ স্বাভাবিক বিষয়। ঘরে ঘরে ছেলে আর মেয়ের দু’জনই নিজেকে সুবিধামতো ছেলে কিংবা মেয়ে বলে দাবি করে আইনগত সমর্থন পাবে। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, হোস্টেল, অফিস-আদালত, কল-কারখানায় যেকেউ যখন ইচ্ছা নিজেকে ছেলে কিংবা মেয়ে দাবি করে আইনগত সমর্থন পাবে। যৌননৈরাজ্য ও পরিচয় বিপর্যয় সমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিবে।