বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘দেশের ক্লান্তিলগ্নে স্বৈরাচার সরকারকে উৎখাত করতে রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের অবদান অপরিসীম। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আন্দোলন করাতে অনেকে এখনো জেলে।’
তিনি সেসব প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের দ্রুত মুক্তির ব্যবস্থা করতে বর্তমান সরকারকে দাবি জানিয়ে আসছেন বলে জানান।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় আরদিয়া সানাইয়ার একটি খাইমায় কুয়েত প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রীতি সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ কোরআন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র কুয়েত।
জামায়াতে আমির প্রবাসীদের বিদেশে যে দেশে অবস্থান করছেন সে দেশের আইনকে শ্রদ্ধার সাথে মেনে চলার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, প্রবাসীরা সবসময়ই অবহেলিত, এখনও অবহেলিত। দূতাবাস থেকে প্রবাসীরা তাদের প্রাপ্য কাঙিক্ষত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ৫৩ বছর বাংলাদেশ পরিচালনায় যারা ছিলেন তারা সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষ দুর্নীতি ও দুঃশাসন আর দেখতে চায় না। জামাত ক্ষমতায় এলে দেশের মালিক নয় জনগণের খাদেম হিসেবে কাজ করবে। দেশের প্রত্যেকটি নাগরিককে দক্ষ শ্রমিক হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘খুনের সাথে জড়িত যারা তাদের অবশ্যই আইনের মাধ্যমে শাস্তি পেতে হবে, তাদের কোনো ক্ষমা নেই।’
জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানের কাছে সাধারণ প্রবাসীরা তাদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া ও অভিযোগ তুলে ধরেন।
প্রবাসীদের অভিযোগ শুনে জামায়াত আমির বলেন, ‘আমি যেই দেশেই যাচ্ছি সেই দেশে প্রবাসীদের কষ্টের হাহাকার শুনতে পাচ্ছি। আমরা সময়মতো পাসপোর্ট পাই না। বাড়তি খরচ করতে হয়। এরে দিতে হয় ওরে দিতে হয়। আবার কেউ মারা গেলে লাশটা সহজে দেশে পাঠানো যায় না। অনেক কান্নাকাটি করতে হয়। এদিক ওদিক দৌঁড়াতে হয়। দেশে যাবে বিমান টিকিটের দাম কয়েকগুণ বেশি করে ফেলা হয়।এটা জুলুম।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেকেই বিভিন্ন কোম্পানিতে কাজ করেন, ন্যায্য পাওনা পান না। সরকার ও অ্যাম্বাসি তাদের পাশে দাঁড়ায় না। তাহলে অ্যাম্বাসি এখানে কেন? অ্যাম্বাসি হচ্ছে সরকারের প্রতিনিধি, এটা হচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। অ্যাম্বাসি যদি প্রবাসীদের বিভিন্ন দুঃখ কষ্ট সমস্যা না দেখে তাহলে এখানে অ্যাম্বাসি দরকার নেই। অ্যাম্বাসির দায়িত্ব হলো প্রবাসীরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হলে বাধাগ্রস্ত হলে এই দেশের সরকারকে বুঝিয়ে সেটা আদায় করা।’
এ সময় প্রত্যেক প্রবাসীকে স্থানীয় আইন কানুন মেনে চলতে অনুরোধ করেন জামায়াত আমির।
কুয়েতের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে দেশটিতে সফর করছেন ডা. শফিকুর রহমান। গত বুধবার সকালে কুয়েত এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে কুয়েত পৌঁছান তিনি। চার দিনের কুয়েত সফর শেষে শনিবার সকালে সৌদি আরবে উমরা করা উদ্দেশে কুয়েত ত্যাগ করেন জামায়াত আমির।
বাংলাদেশ কোরআন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র কুয়েত’র সভাপতি হাফেজ মাওলানা নুরুল আলমের সভাপতিত্বে প্রকৌশলী রুহুল আমিনের সঞ্চালনায় সমাবেশে কুয়েতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা প্রবাসীদের উপস্থিতিতে সমাবেশস্থল জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
বাংলাদেশের জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান সভাস্থলে উপস্থিত হলে তকবিরে মুখরিত হয় পুরো সভা।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ রেজাউল ইসলাম সেলিম
মোবাইল: +৮৮০ ১৭১২ ৫৫৭৯১৬
ই-মেইল: newsporikroma@gmail.com