1. banglahost.net@gmail.com : rahad :
  2. salim@dailynewsporikroma.com : salim_porikroma :
  3. z2dUz2dz2dUz@example.com : z2dUz2dz2dUz :
শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৪৪ পূর্বাহ্ন
২৮শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ঘোষনা
এবার আরেক মাইলফলকে রোনালদো মানুষের মতো আইনগত অধিকার পেল নিউজিল্যান্ডের পাহাড় সোশ্যাল মিডিয়ায় পরীমণি ঝড়, ১৪ সেকেন্ডের ভিডিও ভাইরাল আবার সড়কে তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা, মহাখালী-গুলশান সড়কে যানচলাচল বন্ধ জামায়াত দেশে শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন ধারার সূচনা করেছে : মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে ভর্তি পরীক্ষা নিচ্ছে জবি ক্রিকেট বিশ্লেষক সাংবাদিক দেব চৌধুরীর ইসলাম গ্রহণ এক বছর পর আজ মঞ্চে সাবিনা ইয়াসমিন ‘আমি ব্রিটিশ পুলিশ না, রাস্তায় আমার লোককে লাঠিপেটা করতে চাই না’ : ডিএমপি কমিশনার ছাত্ররা দল গঠন করবে: ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস

বন্যায় ত্রাণ বিতরণে সমন্বয়হীনতা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৪
  • ১৫ বার পঠিত

এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে দেশের পূর্বাঞ্চলীয় ১১ জেলায় চলমান বন্যায় মানুষের দুর্ভোগ ক্রমেই বাড়ছে। ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লা—এই চার জেলার বানভাসি মানুষ বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এসব জেলায় পানি নামছে ধীরগতিতে।

বন্যাকবলিত মানুষের অভিযোগ, সড়কের পাশের বাড়িঘর ও আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর মানুষজন একাধিকবার ত্রাণ পাচ্ছে। কিন্তু প্রত্যন্ত এলাকায় পর্যাপ্ত ত্রাণ যাচ্ছে না। মূলত ত্রাণ বিতরণে সমন্বয়হীনতার কারণে দুর্গতদের সবার কাছে সমানভাবে ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না। এ জন্য ত্রাণ বিতরণে স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারের সহায়তা চেয়েছেন বন্যাকবলিত ব্যক্তিরা। আর স্থানীয় প্রশাসন বলছে, বন্যার্ত মানুষের বিপরীতে বরাদ্দকৃত ত্রাণের পরিমাণ কম।

লক্ষ্মীপুর সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি জেড এম ফারুকী ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সভাপতি কামাল হোসেনের মতে, সবাই উঁচু সড়ক ধরে ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছেন। যে যাঁর মতো করে ত্রাণ দিচ্ছেন। এতে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বানভাসি মানুষের হাতে ত্রাণ পৌঁছায়নি। ত্রাণ বিতরণে প্রশাসনের সমন্বয়ের তাগিদ দেন তাঁরা।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে চলমান বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে হালনাগাদ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, বন্যায় ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর, কক্সবাজারসহ ১১টি জেলার ৫৬ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সব জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী মজুদ রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণের জন্য এসব জেলায় ৩ কোটি ৫২ লাখ নগদ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ২০ হাজার ৬৫০ মেট্রিক টন চাল, ১৫ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার ও গোখাদ্যের জন্য ৩৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

কেউ ত্রাণ পাচ্ছে, কেউ পাচ্ছে না
ফেনীর ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী, পরশুরাম, ফেনী সদর, দাগনভূঞা ও সোনাগাজী—এ ছয় উপজেলা পুরোপুরি বন্যাকবলিত। এসব এলাকায় গত দুই দিনে পানি কিছুটা সরেছে। বুকসমান পানি নেমে এসেছে হাঁটুতে।

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যায় আট লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে দেড় লাখ মানুষ জেলার বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়। আবার অনেকেই প্রতিবেশীর দোতলা ও তিনতলার বাড়িতে গিয়ে উঠেছে। এসব জায়গায় দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ত্রাণ এসেছে। কিন্তু সমন্বয়হীনতার কারণে দুর্গত সবার কাছে তা পৌঁছায়নি।

জানা গেছে, গত পাঁচ দিনে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৬২ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা হেলিকপ্টারে ৩৮ হাজার খাবারের প্যাকেট বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে দিয়েছেন। আবার স্বেচ্ছাসেবকেরাও ট্রাকে ট্রাকে ত্রাণ এনেছেন।

গত পাঁচ দিন সরেজমিনে, স্বেচ্ছাসেবক ও স্থানীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফেনী সদরের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক লাগোয়া গ্রামগুলোতে বেশি ত্রাণ গেছে। কিন্তু ভেতরের দুর্গম গ্রামে ত্রাণ গেছে খুব কম।

মহাসড়ক লাগোয়া ছনুয়া গ্রামের বাসিন্দা আবদুল্লাহ আল বাছিম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের গ্রামে পাঁচ-ছয় ট্রাক ত্রাণ গেছে। কিন্তু ভেতরের লস্করহাটের দিকে এক–দুই ট্রাকের বেশি যায়নি।

জেলা প্রশাসক মোছাম্মৎ শাহীন আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে তালিকা করে সরকারি ত্রাণ সহযোগিতা দেওয়া হবে। অনেক স্বেচ্ছাসেবক জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ত্রাণ দিচ্ছেন।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার আট কিলোমিটার দক্ষিণে দিঘলী ইউনিয়নের পূর্ব দিঘলী গ্রামের মানুষ ত্রাণ খুব একটা পায়নি। বেসরকারি পর্যায়ে যৎসামান্য ত্রাণ পেলেও সরকারি কোনো ত্রাণ তাদের এখানে পৌঁছায়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

কমলনগর উপজেলার চর কাদিরা গ্রামের আরিফ হোসেনের বয়স ৬০ ছুঁই ছুঁই। গত রোববার বিকেলে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তাঁর পরিবার এক সপ্তাহ ধরে পানিবন্দী। লক্ষ্মীপুর-কমলনগর সড়ক থেকে তিন কিলোমিটার ভেতরে তাঁর বাড়ি। তাঁর পরিবার সেদিন পর্যন্ত কোনো ত্রাণ পায়নি।

লক্ষ্মীপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ইউনুস মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, জেলায় বর্তমানে ৭ লাখ ২৪ হাজার মানুষ পানিবন্দী। ত্রাণ বিতরণে সমন্বয়ের বিষয়টি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীসহ সদর উপজেলা ও বেগমগঞ্জ উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। তবে জেলার সেনবাগ, সোনাইমুড়ী, কবিরহাট, সুবর্ণচর ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির দিকে। এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বন্যার পানিতে নিমজ্জিত থাকলেও জেলার বন্যাকবলিত উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকাগুলোয় এখনো ঠিকমতো ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন।

বন্যার্ত মানুষজনের জন্য সরকারিভাবে এ পর্যন্ত বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে নগদ ৪৫ লাখ টাকা এবং ৮৮২ মেট্রিক টন চাল। সরকারি এই ত্রাণ পর্যাপ্ত নয় স্বীকার করে জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, সরকারি ত্রাণ প্রতিদিনই বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে এবং বন্যার্তদের মাঝে বিলি করা হচ্ছে। বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ত্রাণসামগ্রী আনা হলেও তারা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ না করে নিজেদের মতো করে ত্রাণ বিতরণ করে চলে যাচ্ছে। এতে ত্রাণ বিতরণে সমন্বয় ঠিকভাবে হচ্ছে না।

কুমিল্লার ১৭ উপজেলার মধ্যে ১৪টি বন্যাক্রান্ত। গোমতীর পানি নামতে শুরু করেছে। জেলার দক্ষিণের লাকসাম, মনোহরগঞ্জ ও নাঙ্গলকোটে ত্রাণের অপেক্ষায় আছে বন্যার্ত মানুষ। বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ত্রাণের অপেক্ষায় আছে অনেকে।

মনোহরগঞ্জ উপজেলার মনিপুর এলাকার বাসিন্দা সজল শীল জানান, এক সপ্তাহ ধরে পানিবন্দী আছেন। ত্রাণ পাননি এখনো। ঘরে যা ছিল, তা খেয়েই বেঁচে থাকার চেষ্টা করছেন।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবেদ আলী জানান, কুমিল্লায় যে পরিমাণ বন্যার্ত মানুষ আছে, সে তুলনায় ত্রাণ অপ্রতুল। এখন পর্যন্ত ৩৯ লাখ টাকার ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। আরও ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ চেয়েছেন তাঁরা।

চিকিৎসা সংকটে অনেকে
ফেনী সদরের লেমুয়া ইউনিয়নের নেয়ামতপুর গ্রামের একটি স্কুলে পরিবারের সবাইকে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন মো. আলমগীর। তাঁর তিন সন্তান দুই দিন ধরে জ্বর, সর্দি ও কাশিতে আক্রান্ত। পানিতে ভেজার কারণে এমনটা হয়েছে বলে ধারণা তাঁর।

ওই স্কুলের আশপাশ ও রাস্তায় গতকালও বুকসমান পানি ছিল। কোথাও হাঁটুপানি। তাই সন্তানদের নিয়ে বের হননি আলমগীর। চল্লিশোর্ধ্ব এই অটোরিকশাচালক বছর পাঁচেক আগে সড়ক দুর্ঘটনায় এক পা হারান। তাই এত পানি মাড়িয়ে দূরে গিয়ে ওষুধ আনার অবস্থা তাঁর নেই।

আলমগীর বলেন, তাঁদের স্কুলে আরও ১০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। শিশু আছে পাঁচ-ছয়টা। কমবেশি সবাই অসুস্থ। কিন্তু কোনো চিকিৎসাসেবা তাঁরা পাননি। কমিউনিটি হাসপাতালও পানিতে ডুবে আছে।

পানির কারণে গ্রামে গ্রামে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ফেনীর সিভিল সার্জন শিহাব উদ্দিন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, পানি বেশি হওয়ার কারণে গ্রামে গ্রামে চিকিৎসাসেবা পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। ইতিমধ্যে ছয় উপজেলায় ছয়টি জরুরি দল গঠন করা হয়েছে। ক্যাম্পের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

অন্যদিকে ফেনী সদর হাসপাতালে সেবা দেওয়া হচ্ছে। পরশুরাম, ছাগলনাইয়া ও সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে পানি নেমে যাওয়ার পর সেবা চালু হয়েছে। কিন্তু গ্রামগুলোয় কোনো চিকিৎসক দল যায়নি।

আবাসস্থল নিয়ে দুশ্চিন্তা
চট্টগ্রামের তিন উপজেলা ফটিকছড়ি, হাটহাজারী ও রাউজানে বন্যায় বিধ্বস্ত হয়েছে প্রায় ১০ হাজার বসতঘর। এর মধ্যে ৮ হাজার ১০০টি ঘরই বিধ্বস্ত হয়েছে ফটিকছড়িতে। ফটিকছড়ির ইউএনও মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, বন্যা পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পারলেও মানুষ এখন আবাসস্থল নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

এদিকে ভারী বৃষ্টিতে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে কক্সবাজার সৈকতের পাঁচ কিলোমিটার এলাকা। সমুদ্রসৈকতের কলাতলী থেকে লাবণী পয়েন্ট পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটারের সৈকতে ছোট-বড় ভাঙন আছে ১১টির বেশি। জোয়ারের পানিতে বালুচর যখন ডুবে যায়, তখন পর্যটকদের হাঁটার জায়গাও থাকে না।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খাগড়াছড়ির কয়েক শ ঘরবাড়ি। জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান জানিয়েছেন, বন্যায় জেলায় ৪০ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার্তদের জন্য জেলা প্রশাসন এ পর্যন্ত ৫০২ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য ও সাড়ে ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Theme Customized BY WooHostBD