দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ‘একতরফা’ তফসিলের বিরুদ্ধে আগামী রবিবার ভোর থেকে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে বিএনপি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
রিজভী বলেন, ‘নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে একদফার যে আন্দোলন চলছে, এ অবস্থায় বুধবার সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন (ইসি) একতরফা নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করেছেন। শেখ হাসিনার মনোরঞ্জিত যে তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে,
সেই তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে আমি বিএনপির পক্ষ থেকে ঢাকাসহ দেশব্যাপী আগামী রবিবার ভোর ৬টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ঘোষণা করছি।’
সরকার পদত্যাগের একদফা দাবিতে বিএনপিসহ সরকারবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোট গত বুধবার ভোর থেকে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেছে, যা শুক্রবার ভোর ৬টায় শেষ হবে।
একতরফা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীতে আলাদা আলাদা বিক্ষোভ মিছিল শেষে গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২-দলীয় জোট, বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদ ১৯ ও ২০ নভেম্বর সারাদেশে সর্বাত্মক হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করে। বুধবার একই কর্মসূচি ঘোষণা করে লেবার পার্টি।
গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপি মহাসমাবেশ প- হওয়ার পর একদফা দাবিতে বিএনপিসহ সমমনা বিভিন্ন দল ও জোট ২৯ অক্টোবর সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল এবং পাঁচ দফায় ১১ দিন সারাদেশে অবরোধ কর্মসূচির ডাক দেয়।
এদিকে তফসিলের প্রতিবাদে রবিবার থেকে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীও। গতকাল এক বিবৃতিতে দলের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম বলেন, ‘বিরোধী দল ও দেশবাসীর মতামত উপেক্ষা করে জনধিকৃত ও সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করেছে। সমগ্র জাতি এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ দেশের অধিকাংশ বিরোধী দল তথাকথিত নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত ফরমায়েশি তফসিল ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে।’
জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি বলেন, ‘জনগণের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে কমিশনকে অবশ্যই এ তফসিল প্রত্যাহার করতে হবে। সব দলের মধ্যে ঐকমত্য ও সমঝোতা প্রতিষ্ঠিত করে কমিশনকে নতুনভাবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে। আমি জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের গণতন্ত্র হত্যার ফরমায়েশি তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে সারাদেশে আগামী ১৯ নভেম্বর রবিবার ভোর ৬টা থেকে ২১ নভেম্বর মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করছি। ঘোষিত হরতাল কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে সফল করে তোলার জন্য জামায়াতের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও সংগ্রামী দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।’