বঙ্গোপসাগর থেকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ‘রিমালে’র আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে দক্ষিণের ব্যাপক উপকূলীয় অঞ্চল। গতকাল রোববার বিকাল থেকেই ‘রিমালে’র প্রভাব শুরু হয়। প্রথমে ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগ প্রথমে সুন্দরবনে আঘাত হানে। সেই সঙ্গে শুরু হয় জলোচ্ছ্বাস। সন্ধ্যা থেকে ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করে। ৪শ’ কিলোমিটার আয়তনের বিরাট আকারের ঘূর্ণিঝড় ‘রিমালে’র মূল কেন্দ্র বা ‘চোখ’ গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে মোংলার পাশ দিয়ে দেশের উপকূলে আছড়ে পড়ে। একটানা ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা যাবত (মধ্যরাতের পর শেষ রাত পর্যন্ত) আঘাত হানে ভয়াল ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’। ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের আঘাতে হাজারো বসতঘর, হাট-বাজার, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মক্তব ও বিভিন্ন অবকাঠামো কমবেশি বিধ্বস্ত হয়। গাছপালা, ফল-ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অনেক জায়গায় ভেঙে গেছে বেড়িবাঁধ। অনেকেই হতাহত হওয়ার খবর আসছে। বিদ্যুৎ, সড়ক ও নৌপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মোংলার কাছাকাছি দিয়ে বাগেরহাট, পটুয়াখালী, সুন্দরবন, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপের মধ্যবর্তী উপকূলীয় এলাকা অতিক্রম করেছে বড়সড় আকারের ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’। ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১২০ কি.মি. এবং দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়ার আকারে সর্বোচ্চ ১৩৫ কিলোমিটার। সমুদ্র খুবই উত্তাল। ঘূর্ণিঝড়ের তোড়ে ৮ থেকে ১০ ফুট উঁচু ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয় প্রত্যন্ত দূর্গম দ্বীপ ও চরাঞ্চল।
‘রিমালে’র প্রভাবে বিকালেই চর-উপকূল-দ্বীপাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় প্রবল সামুদ্রিক জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পায় কয়েক ফুট। বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে হু হু করে জোয়ারে প্লাবিত হয়। দক্ষিণের উপকূলে সব নদ-নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্লাবিত হয়েছে সুন্দরবনের ব্যাপক এলাকা। উপকূলের বিভিন্ন জায়গায় জোয়ারের পানিতে ডুবে গেছে শতাধিক গ্রাম। ঘূর্ণিঝড় ‘রিমালে’র আঘাতে যেসব জেলা সবচেয়ে ঝুঁকিতে পড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেগুলো হচ্ছেÑ খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং এসব জেলার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরাঞ্চল। ঘূর্ণিঝড় ‘রিমালে’র কারণে মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেত বলবৎ রয়েছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরে ৯ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেত বলবৎ আছে।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগের ঘূর্ণিঝড় সতর্কীকরণ বিভাগের বিজ্ঞানী এস পি সিং গতকাল রাতে সর্বশেষ বুলেটিনে জানান, উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘রিমালে’র (ঘূর্ণিঝড়ের বডি) গত ৬ ঘণ্টায় ১৬ কিলোমিটার গতিতে পূর্ব দিকে অগ্রসর এবং আরো শক্তি অর্জন করে ঘনীভূত হয়। ‘রিমাল’ প্রবল ঘূর্ণিঝড় রূপে মোংলার দক্ষিণ-পশ্চিম পাশ দিয়ে পটুয়াখালীর খেপুপাড়া এবং পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপের কাছাকাছি হয়ে উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। রাতে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রমকালে ‘রিমালে’র গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার, যা দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়ার বেগে ১৩৫ কিলোমিটারে পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপকূলের সন্নিকটে এসে পৌঁছানোর সাথে সাথে ঘূর্ণিঝড়ের অবয়বের (বডি) গতিবেগ এবং ঝড়ের গতিবেগ বৃদ্ধি পাচ্ছিল। ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ তখন থেকে আরও ২ বা ৩ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলে পুরোপুরি আছড়ে পড়ার পথে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ আরও শক্তি অর্জন করায় এর গতিবেগ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১১০ থেকে ১২০ কি.মি., যা দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৩৫ কিলোমিটারে উঠে। ‘রিমাল’ উত্তর দিকে গতিমুখ বজায় রেখে ধেয়ে যাচ্ছিল। ‘রিমালে’র সক্রিয় প্রভাবে গভীর ঘন মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশের বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ‘রিমালে’র প্রভাবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে দেশের নদী বন্দরসমূহকে ৪ নম্বর নৌ মহাবিপদ সঙ্কেত দেখানো হচ্ছে। সারা দেশে নৌ চলাচল বন্ধ রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ‘রিমালে’র কারণে বঙ্গোপসাগর উপকূল উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, মোংলা, কক্সবাজার-মাতারবাড়ী ও পায়রা সমুদ্র বন্দর কার্যক্রম শনিবার রাত থেকেই বন্ধ থাকে। তাছাড়া সারা দেশে নৌপথে যাত্রী ও মালামাল পরিবহণ, ফেরি সার্ভিস বন্ধ রয়েছে। চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট উঠা-নামা সকাল থেকেই বন্ধ আছে। গতকাল সন্ধ্যা থেকে বন্ধ রাখা হয় কর্ণফুলীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল। চট্টগ্রাম থেকে নেয়াখালী, ভোলা, পটুয়াখালী, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরাসহ দেশের অন্তত ১৪টি উপকূলীয় জেলার দশ লাখেরও বেশি উপকূলের নিম্নাঞ্চলের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষকে গত দু’দিনে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে অগণিত মানুষ দুঃসহ ও বিনিদ্র দিনাতিপাত করছে। আবার অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে না গিয়ে বসত ভিটার মাটি আঁকড়ে পড়ে আছে।
‘রিমাল’ গতকাল সকালে আরো ঘনীভূত ও শক্তি অর্জন করে ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে’ পরিণত হয়। এর পর প্রায় সারাদিন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকার সঙ্গে উপকূলসহ দেশের অনেক জায়গায় গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করে। দমকা থেকে ঝড়ো হিমেল হাওয়ার সাথে হালকা থেকে মাঝারি বর্ষণ, কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হয়। বিকাল থেকেই ঘূর্ণিঝড় ‘রিমালে’র অগ্রবর্তী অংশ বা সামনের ভাগ মোংলা, খেপুপাড়া হয়ে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উপকূল হয়ে ভূমিতে প্রবেশ করে। তখন থেকেই ঝড়ের ঝাপটা ক্রমেই বৃদ্ধি পায়।
বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া বিভাগ জানায়, গতকাল বিকাল থেকেই উপকূলে ঘূর্ণিঝড় ‘রিমালে’র সামনের অংশের প্রভাব শুরু হয়। উপকূলের দিকে অগ্রসর হওয়ার গতির সঙ্গে সঙ্গে ঝড়ের গতিবেগও বৃদ্ধি পায়। ঘূর্ণিঝড় ‘রিমালে’র প্রভাবে সমুদ্র ও উপকূলভাগ উত্তাল থাকায় গতকাল সকালেই পায়রা ও মোংলা সমুদ্র বন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়। উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের কাছের দ্বীপ ও চরাঞ্চল ১০ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেতের আওতায় রয়েছে। কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের কাছের দ্বীপ ও চরাঞ্চল ৯ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেতের আওতায় রয়েছে।
আবহাওয়া বুলেটিনে বলা হয়েছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রিমালে’র সামনের অংশের প্রভাবে এবং বায়ুচাপের পার্থক্যের কারণে উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের কাছের দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক সামুদ্রিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুটেরও বেশি উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রিমালে’র প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। অতি ভারী বর্ষণের কারণে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস বা পাহাড়ধস হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় ‘রিমালে’ অতি বৃষ্টিতে পাহাড়ধসের আশঙ্কা
ঘূর্ণিঝড় ‘রিমালে’র প্রভাবে দেশের সব বিভাগে দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে জানায় আবহাওয়া বিভাগ। এ সময়ে অতি বৃষ্টির কারণে ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। আবহাওয়া বিভাগের বিশেষ সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ির পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও পাহাড়ধস বা ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। পাহাড়ে বা পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাসরতদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে গতকাল চট্টগ্রাম মহানগরী ও জেলাসমূহের বিভিন্ন স্থানে রেড ক্রিসেন্ট, ফায়ার সার্ভিস, জেলা প্রশাসন, স্বেচ্ছাসেবীরা মাইকিং করেন। অনেককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়। তবে এখনও অনেকে পাহাড়েরর পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাস করছে। সরিয়ে নেয়ার পরও অনেকে আগের জায়গায় ফিরে আসছে। পাহাড়ে বসবাস করছে ভাসমান, দিনমজুর ও হতদরিদ্রশ্রেণির মানুষেরা। এদেরকে ভাড়া দিয়ে বসবাস করানোর পেছনে দীর্ঘদিন ধরেই রাজনৈতিক মদদপুষ্ট একটি সংঘবদ্ধ চক্র সক্রিয় রয়েছে।
নৌবন্দরসমূহে ৪ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেত
দেশের অভ্যন্তরীণ নদী বন্দরসমূহের জন্য বিশেষ আবহাওয়া সতর্কবার্তায় আবহাওয়াবিদ জানান, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে পূর্ব বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার কিংবা ততোধিক গতিবেগে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। এসব এলাকার নদী বন্দরসমূহকে ৪ নম্বর নৌ মহাবিপদ সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া দেশের অন্যত্র পূর্ব, দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি, বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদী বন্দরসমূহকে ২ নম্বর নৌ হুশিয়ারি সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এবারের ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘রিমাল’ (জব-গধষ)। ‘রিমাল’ ওমানের দেয়া নাম। এটি আরবি শব্দ। এর অর্থ বালু। তাছাড়া ‘রিমাল’ নামে আফগানিস্তানে একটি শহর আছে। উভয় দেশের নাম থেকে ‘রিমাল’ নামটি চয়ন করেছে ঘূর্ণিঝড়ে সম্পর্কিত ভারত মহাসাগর, আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের দেশসমূহের জোটের একটি প্যানেল।
‘রিমালে’র প্রভাবে বৃষ্টিপাত : কমেছে তাপদাহ : পাহাড়ধসের শঙ্কা
ঘূর্ণিঝড় ‘রিমালে’র সক্রিয় প্রভাবে গতকাল রোববার দেশের অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বর্ষণ, কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেই সুবাদে ভ্যাপসা গরম ও তাপদাহের আপাতত অবসান হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে হাতিয়া দ্বীপে ৫২ মিলিমিটার। এ সময়ে ঢাকায় ২, চট্টগ্রামে ১৮, খুলনায় ৪, বরিশালে ৩২, টেকনাফে ৪৬, খেপুপাড়ায় ৩৬, কক্সবাজারে ৩৩ মি.মি. সহ বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে রংপুর বিভাগে কোন বৃষ্টিপাত হয়নি। চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অধিকাংশ স্থানে বৃষ্টিপাত হয়। বর্ষণের সুবাদে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা নেমে আসে সিলেট ও নেত্রকোনায় ৩৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩৪.৮ এবং সর্বনিম্ন ২৭.২ ডিগ্রি সে.।
আজ সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা, ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ২ থেকে ৫ ডিগ্রি সে. হ্রাস পেতে পারে। রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
আগামীকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা, ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
আগামী বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা, ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সারাদেশে ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
এর পরের ৫ দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। তাপমাত্রা ফের বৃদ্ধি পেতে পারে। এদিকে ওই সময়ে দক্ষিণ-পশ্চিম বর্ষারোহী মৌসুমী বায়ু টেকনাফ উপকূল পর্যন্ত অগ্রসর হতে পারে।