1. banglahost.net@gmail.com : rahad :
  2. salim@dailynewsporikroma.com : salim_porikroma :
  3. z2dUz2dz2dUz@example.com : z2dUz2dz2dUz :
বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১২:০৭ অপরাহ্ন
১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ঘোষনা
এবার আরেক মাইলফলকে রোনালদো মানুষের মতো আইনগত অধিকার পেল নিউজিল্যান্ডের পাহাড় সোশ্যাল মিডিয়ায় পরীমণি ঝড়, ১৪ সেকেন্ডের ভিডিও ভাইরাল আবার সড়কে তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা, মহাখালী-গুলশান সড়কে যানচলাচল বন্ধ জামায়াত দেশে শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন ধারার সূচনা করেছে : মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে ভর্তি পরীক্ষা নিচ্ছে জবি ক্রিকেট বিশ্লেষক সাংবাদিক দেব চৌধুরীর ইসলাম গ্রহণ এক বছর পর আজ মঞ্চে সাবিনা ইয়াসমিন ‘আমি ব্রিটিশ পুলিশ না, রাস্তায় আমার লোককে লাঠিপেটা করতে চাই না’ : ডিএমপি কমিশনার ছাত্ররা দল গঠন করবে: ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস

ভিআইপিকে সঙ্গ দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল শিলাস্তিকে

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৬ মে, ২০২৪
  • ৩১ বার পঠিত

ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর নতুন নতুন তথ্য সামনে আসছে। আনারকে হত্যা করার জন্য আরও দুইবার চেষ্টা করা হয়েছিল। ব্যর্থ হয়ে তিনবারের চেষ্টায় মিশন সফল হয়। নানাভাবে পরিকল্পনা করে যখন মূলহোতা আকতারুজ্জামান শাহীন সফল হতে পারেননি তখন তার বান্ধবী শিলাস্তি রহমানের মাধ্যমে ফাঁদ পাতে। আনারকে ব্যবসায়িক আলোচনার পাশাপাশি শিলাস্তির সঙ্গলাভের টোপ দেন শাহীন। সেই টোপে সাড়া দেন আনার। শিলাস্তিকে বলা হয়েছিল বাংলাদেশ থেকে একজন ভিআইপি আসবেন তাকে সঙ্গ দিতে হবে। ঘটনার দিন সঞ্জীবায় লাল গাড়ি থেকে নেমে যাওয়ার সময় আনারের সঙ্গে যে তরুণীকে দেখা গেছে সেই তরুণীই শিলাস্তি। তার সঙ্গে আরও দুজন ব্যক্তি ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে তাদের একজন শিমূল ভূঁইয়া ওরফে আমানউল্লাহ সাইদ ও অন্যজন তানভির।

তার আগে হুন্ডি, স্বর্ণ ব্যবসার আলোচনার জন্য বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাসা থেকে আনারকে ডেকে নেয় ঘাতকরা। বন্ধুর বাসা থেকে বের হওয়ার পর শিলাস্তি ও ওই দুজন আনারকে রিসিভ করে সঞ্জীবার একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে আসেন। সেখানে আগে থেকে প্রস্তুত ছিল জিহাদ ও সিয়াম। পরিকল্পনা অনুযায়ী ক্লোরোফর্ম দিয়ে আনারকে অজ্ঞান করা হয়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল আনার চেতনা হারালে তার কিছু আপত্তিকর ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করবেন। কিন্তু অতিরিক্ত চেতনানাশক প্রয়োগ করায় আনারের আর জ্ঞান ফিরেনি। এতে শিমুল, তানভির, জিয়াদ, সিয়ামসহ অন্যরা হতভম্ব হয়ে যায়। পরে তারা শাহীনের সঙ্গে যোগাযোগ করে। শাহীনের নির্দেশ মতোই আনারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ গুম করার জন্য কসাই জিয়াদ আনারের দেহকে ৮০ টুকরা করে। হাড্ডি থেকে মাংস আলাদা করে মসলা লাগায়। মাথার অংশকে গুঁড়ো করে দেয়। পরে ট্রলিতে করে সেগুলো নিয়ে নিউটাউনের ভাঙড় এলাকার কয়েকটি জলাশয়ে ফেলে দেয়।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পুরান ঢাকায় বেড়ে ওঠা বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শিলাস্তি রহমান শাহীনের দীর্ঘদিনের বান্ধবী। আমেরিকা প্রবাসী শাহীনের হাত ধরেই শিলাস্তি অন্ধকার জগতে পা রাখে। শাহীন দেশে এলেই তার সঙ্গে ক্লাবে, ফ্ল্যাটে রাত কাটাতেন। ঘুরে বেড়াতেন বিভিন্ন পার্টিতে। শাহীন নিজেও অ্যালকোহল ও নানা রকম মাদকে আসক্ত। ঠিক তেমনি পার্টিতে অংশগ্রহণ করলে শিলাস্তিও মাদক নিতেন। নেচে গেয়ে আনন্দ দিতেন শাহীনসহ অনেককে। অনেকটা বেপরোয়া জীবনযাপন করতেন শিলাস্তি। শুধু দেশে নয় শাহীনের সঙ্গে বিভিন্ন দেশেও যাতায়াত ছিল। বিশেষ করে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে হরহামেশাই শাহীন তাকে নিয়ে যেতো। কিন্তু শিলাস্তি শাহীনকে আমেরিকা প্রবাসী হিসাবেই জানতো। তার অন্ধকার জগতের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তেমন কিছুই জানতেন না। আনার হত্যার মিশন বাস্তবায়নের জন্য শিলাস্তিসহ অন্যদেরকে নিয়ে ৩০শে এপ্রিল ভারতে যায় শাহীন। শিলাস্তিকে বলা হয়েছিল বাংলাদেশ থেকে একজন ভিআইপি আসবে। তাকে সময় দেয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। এজন্য নিউমার্কেট থেকে থেকে অনেক কেনাকাটাও করে দেয়া হয়েছিল শিলাস্তিকে। তবে শিলাস্তি তদন্ত সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের সময় সে সেখানে ছিল না। তিনি তখন অন্য একটি কক্ষে ছিলেন। কিন্তু তিনি একসময় ব্লিচিং পাউডারের পচণ্ড উৎকট গন্ধ পান। তখন তিনি অন্যদের জিজ্ঞেস করেন এত গন্ধ কেন। তখন তাকে বলা হয় ফ্ল্যাটে একজন মলত্যাগ করেছে। তাই গন্ধ যাতে না হয় সেজন্য ব্লিচিং পাউডার ছিটানো হয়েছে। তবে ডিবি রিমাণ্ড আবেদনে উল্লেখ করেছে, আমানউল্লাহ সাইদ, তানভির, শেলেস্তি রহমানসহ অজ্ঞাতনামা পলাতক আসামিদের সহযোগিতায় এমপি আনারকে নৃশংসভাবে হত্যা করে লাশের মাংস ও হাড় আলাদা করে গুম করে ফেলে যেন কোনো প্রমাণ না থাকে।

এদিকে, এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য এখনও উদ্‌ঘাটন করতে পারেনি ডিবি। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কি কারণে এই হত্যাকাণ্ড সেটি এখনি বলা যাচ্ছে না। বেশকিছু ক্লু নিয়ে তদন্ত চলছে। গ্রেপ্তারকৃতদের রিমাণ্ডে এ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তবে এরইমধ্যে ঝিনাইদহ এলাকায় রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার, চোরচালানের রুট পরিচালনা, স্বর্ণ ও হুন্ডি ব্যবসা নিয়ে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব এমন বেশ কয়েকটি বিষয়কে সন্দেহ করে তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন কর্মকর্তারা। সূত্রগুলো বলছে, পার্শ্ববর্তী দেশে স্বর্ণ চোরাচালানের রুট নিয়ন্ত্রণ করতেন আনার। তার মাধ্যমেই চোরচালানকারীরা বিদেশে স্বর্ণ পাচার করতেন। এরমধ্যে থেকেই বড় ধরনের কয়েকটি চালানের স্বর্ণ আনার আত্মসাৎ করেছেন। যার আনুমানিক মূল্য ২০০ কোটির মতো। এই স্বর্ণের মালিক আকতারুজ্জমান শাহীন। মূলত আত্মসাৎ করা এসব স্বর্ণ নিয়ে আনারের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব। কিন্তু নানা কারণে শাহীন সেটি আনারকে বুঝতে দিতেন না। মনে মনে সেই ক্ষোভ পুষেছিলেন। সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন তাকে প্রতিশোধের। অনেকে ধারণা করছেন সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশই এই হত্যাকাণ্ড। এ ছাড়া আনার টানা তিনবারের এমপি। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা-বাণিজ্য, চোরাকারবার ও হুন্ডিতে আনার আধিপত্য বিস্তার করে আসছিলেন। তাই তাকে এই পথ থেকে না সরালে আর লম্বা সময় এখানে কেউ হাত দিতে পারবে না। এককভাবে আধিপত্য বিস্তার করাই তার জন্য কাল হয়েছে বলে মনে করছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।

ওদিকে আনারের মরদেহ উদ্ধার নিয়ে এখন ধোঁয়াশা কাটছে না। বিভিন্ন আলামতের ভিত্তিতে ভারতীয় পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আসামির জবানবন্দি মতে লাশ টুকরো টুকরো করা হয়েছে। কসাই জিহাদকে ভাড়া করে এনে আনারের মরদেহ টুকরো করিয়ে জলাশয়ে ফেলে লাশ গুম করা হয়েছে। আসামির দেয়া তথ্যমতে কলকাতার পুলিশ অনেক অভিযান পরিচালনা করেছে। কিন্তু লাশের কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। আদৌ পাওয়া যাবে কিনা সেটিও দেখার বিষয়।

তিন সদস্যের ডিবির টিম ভারতে: এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্ত করতে ৩ সদস্যের ডিবির একটি টিম ভারত যাচ্ছে। শনিবার রাতে অথবা রোববার ভোরেই তারা রওয়ানা করবেন। এর আগে এ নিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। তিনজনের ওই টিমে রয়েছেন, ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, ডিবির ওয়ারী বিভাগের ডিসি আ. আহাদ ও একই ডিভিশনের এডিসি শাহিদুর রহমান। সপ্তাহখানেক তারা ভারতে থেকে আনারের বন্ধু গোপাল ও সেখানে গ্রেপ্তারদের সঙ্গে কথা বলবেন। এ ছাড়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন, লাশ গুমের স্থানও পরিদর্শন করবেন।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)’র অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, এই হত্যার পেছনে অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। এই হত্যা বাস্তবায়নে সবাই পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য। ২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে তাতে অন্তত ৫ থেকে ৬টি গলাকাটার ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে অনেকগুলো বিষয় রয়েছে। কি কারণে হত্যা সেটি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সেটি আরও তদন্ত শেষে বলা যাবে। আগেও আনারকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। নির্বাচনের আগেও তারা হত্যার চেষ্টা করেছে। তখন তারা ব্যর্থ হয়েছে। দ্বিতীয়বার জানুয়ারি মাসে আনার কলকাতায় যান। সেই সময়ে হত্যাকারীরা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে কলকাতায় নিয়ে যায়। কিন্তু হোটেলে থাকার কারণে সেবার তারা ব্যর্থ হয়। তৃতীয় ধাপে তারা এসে সফল হয়েছে। তবে হত্যার আগে তাদের পরিকল্পনা ছিল আনারকে জিম্মি করা। এরপর তার আপত্তিকর ছবি তুলে দুইদিন ব্লাকমেইল করে হুন্ডির মাধ্যমে এবং কলকাতায় থাকা তার বন্ধুদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আদায় করা। কিন্তু আনার ওই বাসায় যাওয়ার পরে তার মুখে চেতনানাশক স্প্রে করায় জ্ঞান হারান। অজ্ঞান অবস্থায় আনারের আপত্তিকর ছবি তোলা হয়। কিন্তু তাদের মূল টার্গেট ছিল হত্যা করা। আদায় করা টাকা হত্যাকারীদের ভাগ করে দেয়ার কথা ছিল। তবে স্প্রে করায় জ্ঞান না ফেরায় ব্ল্যাকমেইলের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে হত্যা করে লাশ গুমের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে। এরপর তারা মোবাইলগুলো বিভিন্নস্থানে পাঠিয়ে দেয়। হত্যাকারীদের একজন আনারের ৪টি মোবাইল বেনাপোল এলাকায় নিয়ে আসে। এখানে এসে আনারের প্রতিপক্ষকে ৪টি মোবাইল থেকে ফোন করা হয়। ফোন করে বলা হয়‘ শেষ’। এর টার্গেট ছিল এই ফোনের সূত্র ধরে যেন পুলিশ প্রতিপক্ষকে নিয়ে ব্যস্ত থাকে। হত্যাকারীদের যেন না পায়।

তিনি বলেন, আনার হত্যার ঘটনা তদন্তে ভারতীয় পুলিশের একটি দল ঢাকায় কাজ করছে। পাশাপাশি আমাদের হাতে গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রযুক্তিগত তথ্য বিশ্লেষণ করে আমরা দুটি বিষয় পেয়েছি। দুটি গ্রুপ এখানে কাজ করেছে। একটি গ্রুপ মদত দিয়েছে আরেকটি গ্রুপ বাস্তবায়নে কাজ করেছে। এই ঘটনার মদতদাতা আকতারুজ্জামান শাহীন ৩০শে এপ্রিল কলকাতায় ৩ সদস্যকে নিয়ে যান। সেই দলে একজন মেয়ে বাস্তবায়নের মূল ফাঁদ ছিল। শাহীন ১০ তারিখ পর্যন্ত অবস্থান করে আমানউল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়াকে বুঝিয়ে দিয়ে দেশে চলে আসেন। তাদের কাছ থেকে আমরা বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছি। যেহেতু ভারতীয় পুলিশ আমাদের এখানে কাজ করছে। তাদের কাজ শেষ হলে আমরাও কলকাতায় চলে যাবো। স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের কোনো সম্পৃক্ততা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্দিষ্ট কোনো কিছুই বলা যাবে না। তবে অনেকগুলো বিষয় আছে। তদন্ত শেষ করে এ বিষয়ে বলা যাবে। হত্যার ঘটনায় কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কিসের ভিত্তিতে হত্যার কথা বলা হচ্ছে জানতে চাইলে হারুন বলেন, আমরা অনেক তথ্য প্রমাণ পেয়েছি। তদন্তের স্বার্থে এখন প্রকাশ করছি না। প্রমাণ পেয়েছে বলেই কলকাতায় হত্যা মামলা হয়েছে। আমাদের দেশে একটি অপহরণ মামলা হয়েছে। কলকাতায় মামলাটি সিআইডি তদন্ত করছে। নিশ্চয়ই তারা আলামত পেয়েছে। কলকাতায় দায়ের হওয়া হত্যা মামলার তদন্তে আমারও যাবো।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Theme Customized BY WooHostBD