স্পোর্টস নিউজ: আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের অষ্টম ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে জিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আশা বাঁচিয়ে রাখলো বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। গতকাল পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে ডাচদের ১৬০ রানে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের তলানি থেকে সপ্তম স্থানে উঠলো ইংলিশরা। টুর্নামেন্টে টানা পাঁচ হারের পর অবশেষে জয়ের মুখ দেখলো তারা। আগে ব্যাট করে অলরাউন্ডার বেন স্টোকসের লড়াকু সেঞ্চুরি ও ডেভিড মালানের হাফসেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ৩৩৯ রান তোলে ইংল্যান্ড। জবাবে ৩৭.২ ওভারে ১৭৯ রানেই অলআউট হয়ে যায় নেদারল্যান্ডস।
আগের দিন অস্ট্রেলিয়া-আফগানিস্তান ম্যাচে অজি অলরাউন্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ব্যাট হাতে অসাধ্য সাধন করেছিলেন। কাল ডাচদের বিপক্ষে বেন স্টোকসের ইনিংসটা তেমন অতিমানবীয় না হলেও ইংলিশদের বাঁচাতে কাল যা করেছেন এই অলরাউন্ডার, তাও কম কৃতিত্বের নয়। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে দুইশ’র আগেই (১৯২ রানে) ৬ উইকেট হারিয়ে বসেছিল ইংল্যান্ড। মনে হচ্ছিল, আড়াইশ করাও কঠিন হয়ে যাবে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের। এমন জায়গায় দাঁড়িয়ে বেন স্টোকস হাঁকালেন লড়াকু এক শতক। তার এই শতকে ভর করেই ইংলিশরা পায় বড় পুঁজি।
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জস বাটলার। ৭ ওভারে দলীয় ৪৮ রানে জনি বেয়ারস্টো (১৭ বলে ১৫) ফিরলেও একটা সময় ১ উইকেটে ১৩৩ রান ছিল ইংল্যান্ডের। সেখান থেকে দারুণভাবে লড়াইয়ে ফেরে ডাচরা। ২০.২ ওভারে জো রুট ৩৫ বলে এক বাউন্ডারিতে ২৮ রান করে ফেরার পর আর মাত্র ৬টি রান তুলতে পারে ইংল্যাান্ড। ২২ ওভারে দলীয় ১৩৯ রানে ওপেনার ডেভিড মালান রানআউটের ফাঁদে পড়ার পর দ্রুত আরও কয়েকটি উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে ইংলিশরা। মালান ৭৪ বলে ১০ চার ও ২ ছক্কায় ৮৭ করেন। মালানের পর হ্যারি ব্রুক, জস বাটলার ও মঈন আলী আউট হলে ১৯২ রানে ৬ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। দলকে এরপর টেনে তোলার দায়িত্ব নেন স্টোকস। সপ্তম উইকেটে ক্রিস ওকসকে নিয়ে ৮১ বলে ১২৯ রানের ঝড়ো জুটি গড়েন এই অলরাউন্ডার। ৪৫ বলে গুরুত্বপূর্ণ ৫১ রান করেন ওকস। ইনিংসের দুই বল বাকি থাকতে আউট হন স্টোকস। ৮৪ বলে তার ১০৮ রানের মারকুটে ইনিংসে ছিল ৬টি করে চার-ছক্কার মার।
নেদারল্যান্ডসের বাস ডি লিড ৭৪ রানে পান ৩টি উইকেট। আরিয়ান দত্ত এবং লগান ফন বিক যথাক্রমে ৬৭ ও ৮৮ রানে নেন ২টি করে উইকেট। বড় লক্ষ্য তাড়ায় নেমে প্রথম ওভাওেন বারেসি জীবন পান জো রুট ক্যাচ মিস করায়। তবে ব্রেকথ্রু পেতে বেশি দেরি হয়নি ইংল্যান্ডের। ইনিংসের ৫ম ওভারে ক্রিস ওকসের বলে আউট হন ম্যাক্স ডি’অড। ফেরার আগে ১১ বলে করে ৫ রান। এর ঠিক পরের ওভারেই উইলির বলে শূন্য রানে আউট হন অ্যাকারম্যান। তৃতীয় উইকেট জুটিতে বারেসি ও এঙ্গেলব্রেখট ৫৪ রানের জুটি গড়ে প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেন। কিš ‘১৮তম ওভারে তাদের জুটি ভাঙেন মঈন আলি। ক্রিস ওকসের দারুণ থ্রোতে মঈন স্ট্যাম্প ভেঙে দিলে রানআউটের শিকার হন বারেসি। এঙ্গেলব্রেখটও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৩৩ রান করে উইলির বলে ফিরে যান তিনি। ছয়ে নেমে বাস ডি লিড ১০ রান করে আউট হলে ১০০ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় নেদারল্যান্ডস। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে অধিনায়ক এডওয়ার্ডস ও নিধামানুরু ৫৯ রানের জুটি গড়ে দলকে সম্মানজনক পুঁজি এনে দেয়ার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত তা পারেননি। ৪২ বলে ৩ চার ও এক ছয়ের মারে ৩৮ রান করে এডওয়ার্ডস শিকার হন মঈন আলির। এরপর বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি ডাচদের ইনিংস। নিদামানুরু ৩৪ বলে ২ চার ও ৩ চয়ের মারে সর্বোচ্চ ৪১ রানে অপরাজিত থাকেন। শেষদিকে আদিল রশিদ ও মঈন আলির ঘূর্ণি জাদুতেই দুইশ’র আগেই গুটিয়ে যায় নেদারল্যান্ডসের ইনিংস। ইংল্যান্ডের হয়ে মঈন আলি এবং আদিল রশিদ যথাক্রমে ৪২ ও ৫৪ রানে পান ৩টি করে উইকেট। ম্যাচসেরা হন বেন স্টোকস।