আফ্রিকার ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের আসর আফ্রিকান নেশন্স কাপের ৩৪তম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে স্বাগতিক আইভরিকোস্ট। রবিবার রাতে আইভরিকোস্টের সবচেয়ে বড় শহর আবিদজানে অনুষ্ঠিত ফাইনালে নাইজিরিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়ে এ কৃতিত্ব দেখিয়েছে দিদিয়ের দ্রগবার দেশ। ফাইনালের নায়ক ক্যান্সারজয়ী তারকা ফুটবলার সেবাস্টিয়ান হলার। ১-১ গোলে সমতা থাকা অবস্থায় ম্যাচ শেষের ৯ মিনিট আগে জয়সূচক গোলটি করেন জার্মান ক্লাব বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের হয়ে খেলা ফরাসি বংশোদ্ভূত এই স্ট্রাইকার।
পিছিয়ে পড়েও ভিক্টর ওশিমেনের নাইজিরিয়াকে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো মহাদেশীয় শিরোপা জয়ের কৃতিত্ব দেখিয়েছে আইভরিকোস্ট। গ্রুপপর্বে আইভরিকোস্টকে অধিনায়ক উইলিয়াম ট্রস্ট-একংয়ের একমাত্র গোলে পরাজিত করেছিল নাইজিরিয়া। কিন্তু ফাইনালে এর পুনরাবৃত্তি করতে পারেনি আফ্রিকার সুপার ঈগলরা। তবে শিরোপানির্ধারণী ম্যাচেও একংয়ের গোলে ৩৮ মিনিটে এগিয়ে গিয়েছিল নাইজিরিয়া। কিন্তু বিরতির পর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে শিরোপা জয় করে আইভরিকোস্ট। ফ্রাংক কেসি ৬২ মিনিটে স্বাগতিকদের সমতায় ফেরান। এরপর ৮১ মিনিটে সাইমন আডিনগ্রায়ের ক্রস থেকে হলার আইভরিকোস্টের তৃতীয় শিরোপা নিশ্চিত করেন। এর আগে ১৯৯২ ও ২০১৫ সালে আফ্রিকান নেশন্স কাপের শিরোপা জয় করেছিল আইভরিকোস্ট। এ জয়ের ফলে নাইজিরিয়ার সঙ্গে তিনবার আফ্রিকান সেরার মুকুট জয়ের রেকর্ড গড়েছে তারা।
গ্রুপ পর্বে ইকুয়েটোরিয়াল গিনির কাছে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার পর নকআউট পর্বের আগেই বিদায়ের শঙ্কায় পড়েছিল আইভরিকোস্ট। এটাই ঘরের মাঠে তাদের সবচেয়ে বড় পরাজয়। এরপর একে একে সেনাগলকে পেনাল্টিতে, মালিকে অতিরিক্ত সময়ের শেষ মুহূর্তের গোলে ও সেমিফাইনালে ডিআর কঙ্গোকে হলারের গোলে পরাজিত করে ফাইনাল উঠে আসে আইভরিকোস্ট। যোগ্য দল হিসেবে ট্রফি জিতলেও তাদের এ শ্রেষ্ঠত্বে ভাগ্যের অবদানও কম নয়। অথচ আফ্রিকান বর্ষসেরা খেলোয়াড় ওশিমেনকে নিয়ে উজ্জীবিত নাইজিরিয়াই এবারের আসরের শিরোপা জয়ের সুস্পষ্ট ফেভারিট ছিল। কিন্তু আইভরিকোস্ট ধীরে ধীরে প্রতিযোগিতায় নিজেদের প্রমাণ করেছে। ২০০৬ সালের পর প্রথম স্বাগতিক হিসেবে আফ্রিকান নেশন্স কাপ জয় করেছে তারা।
১৮ বছর আগে দিদিয়ের দ্রগবার নেতৃত্বে মিশরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত ফাইনালে পেনাল্টিতে স্বাগতিকদের কাছে পরাজিত হয়েছিল আইভরিকোস্ট। এবার দীর্ঘদিন পর ট্রফি জিততে পেরে সঙ্গতকারণেই খুশি দেশটি। ম্যাচ শেষে আইভরিকোস্টের গর্বিত কোচ এমার্স ফা বলেন, এটা রূপকথার থেকেও বড় কিছু। এই শিরোপা জয়ে আমাদের অনেক কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। ফাইনাল ম্যাচটিও তেমনই কঠিন ছিল। আমরা অবিশ্বাস্যভাবে বেঁচে গেছি। আমি আমার দলকে নিয়ে গর্বিত। নাইজিরিয়াকেও অভিবাদন জানাচ্ছি দুর্দান্ত লড়াকু খেলা উপহার দেওয়ার জন্য।