কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) শিক্ষকদের তোপের মুখে ভিসি অধ্যাপক ড. এ এফ এম আব্দুল মঈনকে দোষারোপ করলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান। এ সময় শিক্ষকগণ কোষাধ্যক্ষের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমালোচিত বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন। ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত ভাতা থেকে কোনো প্রকার নীতিমালা ছাড়াই ভাইস চ্যান্সেলরের নামে বৃত্তি প্রদান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ খরচে গেস্ট হাউজ রাখা হলেও সেটি ভিসি’র দখলের কারণ এবং ইউজিসি’র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন-২০০৬ অমান্য করে শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতিতে বৈষম্য সৃষ্টির পাশাপাশি সঠিক নিয়মে আপগ্রেডেশন না দেয়াসহ গুরুতর অনিয়মের বিষয়গুলো নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। পরে এ সকল অনিয়মের দায় ভিসি’র ওপর চাপান কোষাধ্যক্ষ। গত ৩১শে জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল (আইকিউএসি) এর অনুষ্ঠানে তিন অনিয়মের দায় চাপান কোষাধ্যক্ষ।
এ বিষয়ে বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মোকাদ্দেস-উল-ইসলাম বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীর পিএইচডি নথিভুক্তি, ভিসি’র পছন্দের ব্যক্তিদের পদোন্নতি স্থায়ীকরণ করেন। সকল শর্তপূরণ হলেও অন্য শিক্ষকদের পদোন্নতি প্রদানে ব্যাখ্যা জানতে চাইলে তিনি বিব্রতবোধ করেন। তিনি বলেন, এসব সিদ্ধান্ত আমি নিতে পারি না। ভিসি এ ব্যাপারে ভালো বলতে পারবেন। এ সকল অনিয়মের কারণে শিক্ষকরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এ বিষয়ে কথা হলে মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী হাসান জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব নিয়মের বাইরে গিয়ে একাধিক ব্যক্তিকে কোন আইনে নিয়োগ দেয়া হয়েছে? যোগ্যতা থাকার পরও কেন পদোন্নতি আটকে দেয়া হচ্ছে? এ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ খরচে গেস্ট হাউজ রাখা হয়েছে, কিন্তু শিক্ষকদের বঞ্চিত করে ভিসি একাই সেটি কীভাবে দখল করতে পারেন? যে পদ্ধতিতে বৃত্তি দেয়া হচ্ছে সেটার খাত নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। এদিকে ভিসি’র ওপর দায় চাপানোর বিষয়ে জানতে চাইলে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান বলেন, শিক্ষকদের বলেছি গেস্ট হাউজের বিষয় নিয়ে ভিসি’র সঙ্গে কথা বলবো।
দায় চাপানোর বিষয়টি সম্পূর্ণ অসত্য। শিক্ষক নিয়োগ এবং আপগ্রেডেশনের বিষয়টি হায়ার বোর্ডের বিষয়। সেখানে ভিসিসহ অন্যান্য বোর্ড মেম্বাররা সিদ্ধান্ত নেন। একটা সময় ভর্তি পরীক্ষার লভ্যাংশ থেকে শিক্ষকদের একটি অংশ দেয়া হতো। কিন্তু বর্তমানে সেই অর্থ দিয়ে মেধাবৃত্তি দেয়ার বিষয়টি ‘নিয়ম মেনে করা হয়নি’ মন্তব্য সঠিক নয়। তবে এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে ভিসি অধ্যাপক ড. এ এফ এম আব্দুল মঈনের দপ্তরে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে কোনো সাড়া মেলেনি এবং ক্ষুদেবার্তা দিয়েও তার উত্তর পাওয়া যায়নি।