জিততে হলে গড়তে হতো বিশ্ব রেকর্ড। পাকিস্তান যেতে পারেনি তার ধারে কাছেও। পার্থ টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া সাড়ে চারশ রানের বিশাল লক্ষ্যে স্রেফ ৮৯ রানে গুটিয়ে বিশাল ব্যবধানে হেরে গেছে পাকিস্তান। ব্যাটে-বলে অসাধারণ পারফরম্যান্সে ঘরের মাঠে টেস্টে আধিপত্য ধরে রাখল অস্ট্রেলিয়া।
তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে চতুর্থ দিনে ৩৬০ রানের পরাজয় বরণ করেছে পাকিস্তান। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ১৯৯৫ সালের পর থেকে এ নিয়ে টানা ১৫টি টেস্ট হারল দলটি।
দলের এই দুর্দান্ত জয়ের দিন অস্ট্রেলিয়ার তৃতীয় ও সব মিলিয়ে বিশ্বের অষ্টম বোলার হিসেবে পাঁচশ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন লায়ন। পরে আরও এক শিকার ধরে ৫০১ উইকেটে ম্যাচ শেষ করেছেন ৩৬ বছর বয়সী অফ স্পিনার।
তবে দারুণ অলরাউন্ডার নৈপূণ্যে ম্যাচসেরা হয়েছেন মিচেল মার্শ। প্রথম ইনিংসে ৯০ রানের পর নিয়েছিলেন ৩৪ রানে ১ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে করেন অপরাজিত ৬৩ রান।
প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার ৪৮৭ রানের জবাবে ২৭১ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। ২১৬ রানে এগিয়ে থাকা অস্ট্রেলিয়া চাইলে পাকিস্তানকে ফলোঅন করাতে পারত। কিন্তু তা না করে নিজেরাই দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে নামে। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট আরও ২৩৩ যোগ করে ইনিংস ঘোষণা করে স্বাগতিকরা।
৪৫০ রানের রেকর্ড লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম ওভার থেকেই আসা-যাওয়া শুরু হয় পাকিস্তানের। তা শেষ হয় ৩০.২ ওভারে ৮৯ রানে। ইনিংসে দুই অঙ্কে যেতে পারেন কেবল তিন ব্যাটার। সর্বোচ্চ ২৪ রান সউদ শাকিলের। এর মধ্যে আবার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২০ রান এসেছে অতিরিক্ত খাত থেকে।
চা বিরতির পর এক ঘণ্টাও টেকেনি পাকিস্তান। আর ১৩.২ ওভারের মধ্যেই শেষ ৬ উইকেট খোয়ায় দলটি।
দুর্দান্ত বোলিংয়ে তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন মিচেল স্টার্ক ও জস হেইজেলউড। দুটি নিয়েছেন নাথান লায়ন। ফাহিম আশরাফকে রিভিউ নিয়ে এলবিডব্লু করে ক্যারিয়ারে নিজের ৫০০তম উইকেটটি পেয়েছেন লায়ন।
২০১১ সালে প্রথম বলেই উইকেট নিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ার শুরু করা লায়ন পাঁচশর ঠিকানায় পৌঁছালেন ২৩০ ইনিংসে। প্রায় এক যুগের ক্যারিয়ারে ২৩ বার ইনিংসে ৫ উইকেটের সঙ্গে ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছেন ৪ বার।
২ উইকেটে ৮৪ রান নিয়ে চতুর্থ দিন শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। পাক বোলারদের দিনের শুরুটা ছিল ভালোই। শুরুতেই খুররাম শেহজাদ ফেরান আগের দিনের অপরাজিত ব্যাটার স্টিভেন স্মিথকে (৮৭ বলে ৪৫)। পরে ট্রাভিস হেডকেও (১৯ বলে ১৪) টিকতে দেননি আমের জামাল।
এরপর খাজার সাথে ১২৯ বলে ১২৬ রানের জুটি গড়েন মিচেল মার্শ। খাজা স্বভাবসূলভ ধীর ব্যাটিং করলেও ৬৮ বলে অপরাজিত ৬৩ রানের ইনিংস খেলেন মার্শ। ১৯০ বলে ৯ চারে ৯০ রান করে শাহিন শাহ আফ্রিকর বলে বাবর আজমকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন খাজা। খাজা আউট হতেই আসে ইনিংস ঘোষণা।
আগামী ২৬ ডিসেম্বর মেলবোর্নে শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট।