জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা দফায় দফায় নির্যাতিত হয়েছি। দেশের লাখ লাখ মানুষ, আলেম, ওলামা, প্রতিবাদী কণ্ঠকে স্তব্ধ করে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে এটি প্রমাণিত হয়েছে সবকিছু স্তব্ধ করতে চাইলেই স্তব্ধ করা যায় না। আমি যুব সমাজকে অভিনন্দন জানাতে চাই, যুব সমাজ ও জনগণের অভ্যুত্থানের কারণে সাড়ে ১৫ বছরের জমা জুলুম-জঞ্জাল ভেসে গেছে। যারা জাতিকে অপমানিত করেছে, তারা কোনোদিন সম্মানিত হতে পারবে না। গতকাল দুপুরে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের বাবনপুর গ্রামে কোটা আন্দোলনে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদের কবর জিয়ারতসহ তার পরিবারের খোঁজখবর নেয়া শেষে জাফরপাড়া কামিল মাদ্রাসায় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আগামীতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দুর্বৃত্তপনা, স্বৈরাচারীপনা ও জুলুমবাজ সরকার যেন না আসে, সেলক্ষ্যে যুব সমাজ ও দেশবাসীকে সোচ্চার থাকতে হবে। সেই সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক শক্তি কিংবা অন্য শক্তি দেশের বিপ্লবের ফলকে ছিনিয়ে নিতে না পারে সেদিকে প্রত্যেক নাগরিককে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে।
জামায়াতে ইসলামীর আমীর বলেন, সাড়ে ১৫ বছর গোটা জাতির ওপর নির্যাতনের কষ্ট নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। এই সাড়ে ১৫ বছরে ইতিমধ্যে জীবন থেকে ৩২টি ঈদ বিদায় নিয়েছে। দেশের মানুষ ঈদ উদ্যাপন করতে পারে নাই।
খুন, গুম, হত্যা, ধর্ষণ, সন্ত্রাস, মানুষের উপর সীমাহীন নির্যাতন-জুলুমের কারণে গোটা জাতির শ্বাস বন্ধ করে দিয়েছিল। আল্লাহ এ জাতিকে শ্বাস ফেলার সুযোগ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, জাতি এটিকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা যুদ্ধ বলে আখ্যায়িত করেছে। এই যুদ্ধের মহানায়ক আপনার সন্তান-আমাদের সন্তান আবু সাঈদ। আমার পক্ষ থেকে দলের পক্ষ থেকে আবু সাঈদের প্রতি ভলোবাসা, কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। যে সন্তান জাতিকে মুক্তির পথ দেখিয়েছে আমরা তার বাবা-মার মুখ দেখতে এসেছি। পুলিশ তার মুখের কথা শুনেছে, কিন্তু বুকের ভাষা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা এর ধিক্কার জানাই। যারা এ কাজ করেছে তারা মানুষ নয়, তারা পশু। এ পশুদের বিচার অবশ্যই হবে। সেই সঙ্গে যারা গুলি করার নির্দেশ দিয়েছে তাদেরও বিচার হবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসন নিয়ে তিনি বলেন, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য একদিন আগেও বেপরোয়াভাবে ১৩৬ জনকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা যুব সমাজকে অভিনন্দন জানাই। এই জাতি চিরদিন তোমাদের কাছে ঋণী হয়ে থাকবে ইনশাআল্লাহ। তোমাদের প্রতি অনুরোধ, এ জাতিকে তোমরা ছেড়ে দিও না। আগামীতে যেন দেশে কোনো স্বৈরাচার হয়ে উঠতে না পারে। সমাবেশে জামায়াত-শিবিরের হাজার হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।